স্বাস্থ্যসম্মত আইসিটি কর্মপরিবেশ (Healthy Work Environment of ICT )

এইচএসসি (বিএমটি) ভোকেশনাল - ডিজিটাল টেকনোলজি ইন বিজনেস-১ - ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ ও ঝুঁকিসমূহ | NCTB BOOK

স্বাস্থসম্মত আইসিটি কর্মপরিবেশের জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট ভৌত পরিবেশ এবং কিছু সতর্কতা, যা নিচে আলোচনা করা হলো।

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কাজের পরিবেশ

▪️কাজের স্থান নির্ধারণ : কাজের স্থানে কম্পিউটার যন্ত্রপাতির ব্যবহার সম্পর্কিত স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা আইনে আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকতে হবে। নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করার সময় এবং ICT পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে নিয়োগ কর্তাকে অবশ্যই বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।

▪️আলো : রুম যথেষ্ট আলোকিত হতে হবে। তবে কম্পিউটারের মুখোমুখি বা পিছনে জানালা থাকা যাবে না, যাতে আলো পড়ে। কাজের স্থানে এমনভাবে আলোকিত করতে হবে, যাতে কম্পিউটার স্ক্রিন হতে প্রতিফলিত আলো চোখের পীড়ন সৃষ্টি করতে না পারে। সেক্ষেত্রে জানালার পর্দা বা ব্লাইন্ড ব্যবহার করতে হবে।

আসবাবপত্র : চেয়ার, টেবিল এবং কম্পিউটারের সাথে সংশ্লিষ্ট আসবাবপত্র আরামদায়ক ও শোভনীয় হতে হবে। উচ্চতা সমন্বয় করা যায় এরূপ চেয়ার সরবরাহ করতে হবে এবং ডেস্ক ও কী-বোর্ড হতে সঠিক উচ্চতা এবং দূরত্বে স্থাপন করতে হবে।

▪️শব্দ : কাজের স্থান নিরেট হতে হবে এবং শব্দ উৎপাদনকারী ডিভাইস, যেমন- ডট-ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার অ্যাকাইসটিক কাভার দ্বারা সংযুক্ত করতে হবে অথবা পৃথক রুমে রাখতে হবে, যাতে শব্দদূষণ না হয় ৷

• হার্ডওয়্যার : স্বাস্থ্যসম্মত হার্ডওয়্যার ব্যবহার করতে হবে, যেমন- লো রেডিয়েশন মনিটর ব্যবহার। স্ক্রিন কম্পমান হওয়া যাবে না এবং ঢালু ও আংটাযুক্ত হতে হবে। কী-বোর্ড পৃথক পরিবর্তনশীল এবং কাজের সহায়ক হতে হবে।

সফটওয়্যার : কর্তৃপক্ষকে এমন সফটওয়্যার নির্বাচন করতে হবে যাতে, ব্যবহারকারীরা সহজে ব্যবহার করতে পারে এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কর্মচারী যাতে সহজে কাজ করতে পারে এজন্য নিয়োগকর্তার প্রয়োজন মতো সফটওয়্যার বাছাই করতে হবে। এটি ব্যবহার করা অবশ্যই সহজ হতে হবে।

▪️কাজের পরিবেশ : কাজের স্থানে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং আরামদায়ক তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিচের চিত্রে একটি সুপরিকল্পিত কম্পিউটারের কাজের স্থানের বৈশিষ্ট্য দেখানো হয়েছে।

📝 জেনে রাখো

আইসিটি কর্মপরিবেশের অন্যতম অংশ হলো একটি সুপরিকল্পিত কম্পিউটার ওয়ার্কস্টেশন।

হাত ও কব্জির সুরক্ষা

হাত ও কব্জির সুরক্ষার জন্য কতকগুলো ব্যায়াম করা উচিত। নিচে সেগুলো বর্ণনা করা হলো—

হাতের ব্যায়াম : অ্যাথলেটরা খেলার আগে যেভাবে নিজের প্রস্তুতি ঠিক করে, সেভাবেই কী-বোর্ড ব্যবহারের পূর্বে সবার উচিত হাতের একটু ব্যায়াম করে নেওয়া। বিভিন্ন রকমের হাতের ব্যায়াম রয়েছে। প্রথমে খুব হালকাভাবে হাত মেসেজ করতে হবে, কনুই থেকে হাতের কব্জি পর্যন্ত হাতের তালু দিয়ে উপর থেকে নিচে বা নিচ থেকে উপরের দিকে চাপ দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে কর্মক্ষেত্রে হাতের ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে একটি বিরতি নিয়ে নিতে হয়।

চিত্র : হাত ও কব্জির ব্যায়াম

🚻 দলগত কাজ : শ্রেণি কক্ষে দলগতভাবে ভাগ হয়ে, হাত ও কব্জির ব্যায়ামগুরো করো। ঠিক মতো অনুশীলনের জন্য এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে সাহায্য করো।

কব্জির অবস্থান : কব্জি বা কনুইয়ের ব্যথা এড়িয়ে চলার জন্য টাইপ করার সময় কব্জি ও হাত সোজাসুজিভাবে রাখতে হবে। কী-বোর্ডকে ডেস্কের উপর রেখে এটিকে নিচু টেবিলে বা কী-বোর্ড ড্রয়ারের মধ্যে রাখতে হবে। না হলে কব্জির নার্ভগুলো কোষের বিরুদ্ধে ঘর্ষণ শুরু করবে ফলে RST pain অনুভব হবে।

 

স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কম্পিউটার ব্যবহারের নিয়মাবলি

স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীর আসন ব্যবস্থা ও শরীরের বিভিন্ন অংশের অবস্থান যথাযথ নিয়মে হওয়া উচিত। এর ফলে ব্যবহারকারী স্বাচ্ছন্দ্যে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবে এবং অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহার করার ফলে সৃষ্ট রোগের ঝুঁকি কমে যাবে। স্বাস্থ্যসম্মত ও সঠিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম নিম্নে দেয়া হলো।

মাথা : কম্পিউটারে কাজ করার সময় মাথাকে সোজাসুজিভাবে রাখতে হবে। এসময় স্ক্রিন থেকে হাতের দূরত্ব অনুযায়ী মাথা সামনে বা পিছনে নেওয়া যাবে না।

গলা : গলাকে রিল্যাক্সড ও বিস্তৃতভাবে রাখতে হবে।

ঘাড় : ঘাড়কে নিচে করে রাখতে হবে এবং সোজাসুজি বসতে হবে।

পেছন : পিঠকে কোমর থেকে সামান্য সামনে আনতে হবে। পিঠের নিচের অংশ স্বাভাবিকভাবে একটু বাঁকা করে রাখতে হবে।

কনুই : কনুইকে সঠিক কোণে (Angle) রিল্যাক্সড ভাবে রাখতে হবে।

কব্জি : কব্জিকে নিরপেক্ষ ও শিথিলভাবে রাখতে হবে। এটিকে বেশি উপরে বা নিচে নেওয়া যাবে না। হাঁটু : হাঁটুকে কোমরের তুলনায় একটু নিচে রাখতে হবে।

চেয়ার : হাঁটুকে একটি সুবিধাজনক অবস্থানে রাখার জন্য চেয়ারকে সামনের দিকে একটু ঢালুভাবে রাখতে হবে।

• লাইটের উৎস: আলো মাথার পেছন দিক থেকে আসতে হবে। 

স্ক্রিন: স্ক্রিনকে চোখের লেভেলে বা তার চেয়ে একটু নিচে রাখতে হবে। Anti-glare স্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। 

আঙ্গুল : আঙ্গুলকে স্বাভাবিকভাবে একটু বাঁকা করে রাখতে হবে।

কী-বোর্ড : কী-বোর্ডকে পুরোপুরি flat করে রাখতে পারলে বা কনুইয়ের লেভেলে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। কম্পিউটারের যে-সব কী ধরার জন্য পুরো হাতকে নাড়তে হয় সে সব কী-বোর্ড কে শুধুমাত্র আঙ্গুল বা কব্জির ঘুরিয়ে না ধরাই ভালো। একটু পর পর বিরতি নিতে হবে।

পা : পা ফ্লোরের উপর সোজাভাবে রাখতে হবে। খাটো লোকদের foot rest নিতে হতে পারে।

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion